ইসলামের দৃষ্টিতে কোরবানির পশু কেমন হওয়া উচিত



ইসলাম ধর্মে কোরবানি হচ্ছে একটি গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত প্রত্যেক সামর্থ্যবান ব্যক্তির উপর কুরবানী দেওয়া ওয়াজিব যেহেতু এটি একটি ইবাদত তাই ইসলামের দৃষ্টিতে কোরবানির পশু কেমন হওয়া উচিত জেনে নিন বিস্তারিত।
ইসলামের দৃষ্টিতে কোরবানীর পশু কেমন হওয়া উচিত

চলুন তাহলে আজকের আর্টিকেলের মাধ্যমে জেনে নেওয়া যাক ইসলামের দৃষ্টিতে কোরবানির পশু কেমন হওয়া উচিত।

ভূমিকা 

কুরবানী দেওয়া ওয়াজিব কোরবানি দেওয়ার পূর্বে ইসলামের দৃষ্টিতে কোরবানির পশু কেমন হওয়া উচিত জেনে আপনার কুরবানী ক্রয় করতে হবে যদি আপনি না জেনে থাকেন তাহলে আজকে জানতে পারবেন এ আর্টিকেল থেকে যেহেতু আপনি আল্লার সন্তুষ্টি অর্জন এর জন্য পশু কোরবানি করবেন ।আপনার সম্পদ ব্যয় করে যেহেতু আপনাকে অবশ্যই জানতে হবে পশু সম্পর্কে।
 আল্লাহ কি ধরনের পশু কুরবানী করার জন্য বলেছেন সুস্থ না অসুস্থ সেটি বন্যপ্রাণী নাকি গৃহপালিত সেটি চলাফেরা করতে পারে নাকি চলাফেরা করতে পারে না বয়স কত হতে হবে সবগুলো বিষয় অবশ্যই আপনাকে জানতে হবে।

ইসলামের দৃষ্টিতে কোরবানির পশু কেমন হওয়া উচিত

ইসলামের দৃষ্টিতে কোরবানির পশুতি অবশ্যই সুস্থ সবল হতে হবে এবং দোষ ত্রুটিমুক্ত হতে হবে ইসলামের ছয় ধরনের পশু পশু কুরবানী দেওয়া জায়েজ গরু মহিষ দুম্বা ঘেরা ছাগল অবশ্য এগুলোর বয়স কত হবে সেটাও আপনাকে জানতে হবে দুম্বা ছাগল এবং সর্বনিম্ন এক বছর হতে হবে অর্থাৎ একটা ঈদুল আযহার চাঁদ ওঠার পূর্বে জন্মগ্রহণ থেকে পরের ঈদুল আযহার চাঁদ পর্যন্ত এক বছর ধরতে পারেন।

 কেউ কেউ বলেছেন ভেড়া যদি বেশ মোটা তাজা হয় তাহলে ৬ মাসের হলে কোরবানি করা যাবে এতে কোন সমস্যা হবে না উটের ক্ষেত্রে পাঁচ বছর বয়স হতে হবে না। কি সমস্যা থাকলে কোরবানি হবে না জেনে নিন যদি পশু জন্মগত ত্রুটি থাকে যেমন কানকাটা নাক কাটা অন্ধ হওয়া দাঁত না থাকা লেজকাটা পা না থাকা গড়া সহ শীং উপরে যাওয়া কানের শ্রবণ শক্তি না থাকা ।

চলার ক্ষমতা না থাকে কুরবানী করার স্থান পর্যন্ত যাওয়ার যদি শক্তি না থাকে যদি পাগলা হয় তার কারণে বড় বড় আলেমরা বলেছেন কোন পশুর মগজ হাড়ের মগজ যদি শুকিয়ে যায় তাহলে সেটা দ্বারা কোরবানি হবে না কুরবানীর পশু সম্পর্কে কুরআনের ভাষায় বলা হয় বাহিমাতুল আন আম অর্থাৎ অহিংস গৃহপালিত চতুষ্পদ জন্তু।

 ইসলামের দৃষ্টিতে কোরবানির পশুটি তরতাজা হৃষ্টপুষ্ট এবং বেশি মাংসওয়ালা হতে হবে দেখতে সুন্দর এবং আকর্ষণীয় হতে হবে। কথায় বলে প্রথমে দর্শনধারী তারপরে গুণবিচারী অতএব পশুটি যেন সবার দৃষ্টিতে ভালো লাগে অতএব কুরবানীর পশুটি অবশ্যই দোষ ত্রুটিমুক্ত হতে হবে ইসলামের দৃষ্টিতে কোরবানির পশু কেমন হওয়া উচিত সে সম্পর্কে পোষ্টের পরবর্তী অংশে আমরা আরও জানতে পারবো।

কোন কোন পশু কোরবানি দেওয়া যায় না

যে সমস্ত পশু রোগাক্রান্ত এবং দুর্বল সেগুলোকে কুরবানী দেওয়া যায় না। মহানবী হযরত(সা;) কে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল কোন ধরনের পশু কুরবানী করা পরিহার করতে হবে তিনি উত্তরে হাত দিয়ে বলেন চারটি পশু যার পঙ্গত্ব স্পষ্ট চোখের সমস্যা যুক্ত যে সমস্যা স্পষ্ট রোগাক্রান্ত যে রোগ স্পষ্ট এবং দুর্বল যার অস্থিমজ্জা নাই ।অন্য দলিলে বলেছেন ওইগুলো ত্রুটির চেয়ে মারাত্মক।

অন্য ত্রুটি এগুলোর অধিভুক্ত করতে হবে যে পশু রোগ জনিত কারণে হাঁটতে অক্ষম অন্ধ পশু যে তার দুই চোখে কিছু দেখে না যে পশু গর্ভবতী যতক্ষণ সংকা দূর না হয় পশু গলায় ফাঁস লেগে কিংবা উপর থেকে পড়ে আহত অবস্থায় মৃত্যু পথযাত্রী সে পশু যে পশুঅতিরিক্ত খাবার খেয়ে আশঙ্কায় আছে যতক্ষণ তার আশঙ্কা দূর না হয় যেসব প্রাণী কুরবানী দেওয়া বৈধ না ।

যে সকল প্রাণী কোরবানি করা জায়েজ নাই কুরবানী কেনার পর যদি ত্রুটি থাকে এমন কোন প্রকার দেখা যায় যাতে কোরবানি জায়েজ নয় তাহলে সেই কুরবানী হবে না আবার নতুন করে কুরবানী দিতে হবে।

কোরবানির পশুর বয়স কত হলে কুরবানী করতে পারবেন

গরু মহিষ এগুলোর বয়স ২ বছর হলে কুরবানী করা যাবে ।কুরবানী করার জন্য উটের বয়স সর্বনিম্ন ৫ বছর হতে হবে ভেড়া দুম্বা এবং ছাগল এগুলোর বয়স এক বছর হলে কুরবানী করা যাবে তবে দুম্বা যদি শরীর স্বাস্থ্য মোটাতাজা হয় তবে ৬ মাস বয়সের কুরবানী করা যাবে কুরবানী এর পূর্বে অবশ্যই আপনাকে কোরবানির পশুর বয়স জেনে কুরবানী কিনতে হবে। 

কুরবানীর পশুর বয়সের সাথে সুন্দর হয় খেয়াল রাখতে হবে স্বাস্থ্যবান এবং প্রথম দেখায় যেন সবাই পছন্দ করে অবশ্য দোষ মুক্ত এবং ত্রুটিমুক্ত হতে হবে। কোরবানি যদি মোটা তাজা হয় তবে বয়স যদি ৫ ২ ১ বছর না হয় আবার যদি দেখতে এক দুই পাঁচ বছর মনে হয় কিংবা তার চেয়েও বেশি মনে হয় তাহলে সেটি কোরবানি দেওয়া যাবে যেসব বয়স গুলোর কথা উল্লেখ করা হয় ।

যদি ওই বয়সের কোন পশু পাওয়া না যায় এবং অত্যন্ত কষ্টকর হয় অর্থাৎ ওই বয়সের পশু পাওয়া কষ্টকর তাহলে তার কম হলেও চলবে অর্থাৎ কোরবানি করা যাবে রাসূলুল্লাহ( সা )বলেছেন তোমরা অবশ্যই মুসিন্না অর্থাৎ নির্দিষ্ট বয়সের পশু কোরবানি করবে তবে তা যদি দুষ্কর হয় তাহলে ছয় মাসের কোরবানি করবে মহান আল্লাহ যেন আমাদের নির্ধারিত বয়সের এবং সুন্দর পশু কোরবানি করার তৌফিক দান করেন।

কোরবানি না হওয়ার কারণ

কুরবানীর জন্য অবশ্যই সুস্থ সবল এবং মোটা তাজা দেখতে সুন্দর এবং আকর্ষণীয় পশু হতে হবে । এটা আমাদের জানা।কোরবানির পশুটি যদি অসুস্থ হয় নাক কাটা কানকাটা পা ভাঙ্গা জিম্বা কাটা দুই চোখ অন্ধ হওয়া ইত্যাদি কুরবানী দিলে আপনার কুরবানী হবে না যদি আপনার কুরবানী শরিকদের মধ্যে কারো নিয়ত হয় খাওয়ার জন্য কুরবানী করা তাহলে কুরবানী হবে না ।

কোনো রকম সন্দেহ থাকলে কোরবানি হবে না মহান আল্লাহর নিকট কোরবানির রক্ত মাংস কিছুই যায় না আশা করি এসব বিষয়গুলো থেকে জানতে পেরেছেন ইসলামের দৃষ্টিতে কুরবানী কেমন হওয়া উচিত কোরবানির পশুর বয়স কত হলে কুরবানী করতে পারবেন কোন কোন পশু কোরবানি দেওয়া যায় না কুরবানী না হওয়ার কারণ তাই ইসলামের বিধান মেনে পশু কুরবানী করতে হবে।

ছাগল কোরবানির নিয়ম

ছাগল দুম্বা ভেড়া ইত্যাদি কুরবানী করা জায়েজ আছে আমরা জেনেছি আজকে জানবো ছাগল কোরবানি করার নিয়ম প্রথমে আমরা যে ছাগলটি কুরবানী করব সে ছাগলটি হোক খাসি অথবা মাদি ছাগল সমস্যা নাই তবে সেটি অবশ্যই সুস্থ সবল হতে হবে। বয়স এক বছরের হতে হবে ছাগলটি যদি একটি ত্রুটি থাকে তাহলে কুরবানী হবে না কান কাটা পাগল হওয়া ।

দীর্ঘদিন যাবত অসুস্থ থাকা ইত্যাদি তাই কোরবানির জন্য সুস্থ সবল পশু ক্রয় করতে হবে। যেহেতু আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য কুরবানী করবেন সেহেতু অবশ্যই কোরবানির নিয়ম মেনে কুরবানী করা উত্তম একজন ব্যক্তির জন্য একটি ছাগল কুরবানী করতে হবে।

কোরবানির মাংস বন্টনের নিয়ম

কুরবানির মাংস আত্বীয় সজন গরিবদের মাঝে বন্টন করতে কিংবা তাদেরকে দিতে হবে কুরবানির মাংস যদি আত্মীয়স্বজন ও গরিবদের না দেয়া হয় তাহলে সেটি হয় অনেক গহিত কাজ যেহেতু কোরবানি দেওয়ার মাধ্যমে কোরবানি দাতা নিরাপদ থাকেন ও অহংকার থেকে দূরে থাকেন কুরবানীর মাংসকে তিন ভাগে ভাগ করতে পারেন ।

যেহেতু পরিষ্কার ইসলাম বলেছেন কুরবানীর রক্ত কিংবা মাংস হাড্ডি কোনটাই আল্লাহর নিকট পৌঁছায় না আল্লাহ চান তার নিয়ত মহানবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু সাল্লাম কোরবানির মাংস ভাগ করার নিয়ম বলে দিয়েছেন আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রাজু থেকে বর্ণিত রাসূল (সা)কুরবানীর গোস্ত একভাগ নিজের পরিবারকে খাওয়াতেন এক ভাগ আত্মীয়-স্বজনদেরকে এবং গরিবদের মাঝে বন্টন করতেন আপনি অবশ্যই কোরবানির মাংস গুলো এভাবে ভাগ করে সবার মাঝে বিতরণ করতে পারেন।

লেখকের মন্তব্য

পরিশেষে আমি একটি কথাই বলতে পারি যেহেতু কুরবানী দেওয়া হচ্ছে একটি এবাদত সেহেতু আমাদের প্রত্যেকের উচিত ইসলামের দৃষ্টিতে কোরবানির পশু যেমনটা ইসলাম এর বিধি-বিধান নির্ধারণ করেছেন তদ্রূপ সেইভাবেই কোরবানি দিতে হবে।

আমার এ আর্টিকেলটি যদি আপনাদের ভালো লেগে থাকে অথবা সামান্য উপকারে আসে তাহলে বন্ধু-বান্ধব এবং আত্মীয় স্বজনদের মাঝে শেয়ার করুন এতক্ষণ যাবৎ সঙ্গে থাকার জন্য ধন্যবাদ পরবর্তী আর্টিকেল পেতে ভিজিট করুন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url